bayyinaat

Published time: 05 ,November ,2018      20:34:27
পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতে শাফায়াত
সকল ধর্মবিশ্বাসী, বিশেষত সাধারণভাবে সকল মুসলমানই শাফায়াতে বিশ্বাসী অর্থাৎ কিয়ামতের দিন আল্লাহর ওলিগণ একদল গুনাহগার বান্দার জন্য সুপারিশ ও ক্ষমা প্রার্থনা (শাফায়াত) করবেন এবং এর মাধ্যমে তাদেরকে দোযখের আগুন হতে মুক্তি দিবেন। এর সপক্ষে অনেক কোরআনী ও হাদিসের দলিল রয়েছে।
সংবাদ: 104

পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতে শাফায়াত

بل عبادٌ مکرمون لا یسبقون بالقول و هم بامره یعملون یعملون ما بین أیدیهم و ما خلفهم ولا یشفون إلا لمن ارتضی 

সারাংশঃ সকল ধর্মবিশ্বাসী, বিশেষত সাধারণভাবে সকল মুসলমানই শাফায়াতে বিশ্বাসী অর্থাৎ কিয়ামতের দিন আল্লাহর ওলিগণ একদল গুনাহগার বান্দার জন্য সুপারিশ ও ক্ষমা প্রার্থনা (শাফায়াত) করবেন এবং এর মাধ্যমে তাদেরকে দোযখের আগুন হতে মুক্তি দিবেন। এর সপক্ষে অনেক কোরআনী ও হাদিসের দলিল রয়েছে।

ট্যাগ: পবিত্র কোরআন, শাফায়াত, শাফায়াতের অপরিহার্যতা, শাফায়াতের প্রভাব , শাফায়াতকারীদের বৈশিষ্ট্য, শাফায়াত প্রার্থীদের বৈশিষ্ট্য

পবিত্র কোরআনে শাফায়াত

কোরআনের শাফায়াত সম্পর্কিত আয়াতসমূহকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়।

১। যে সকল আয়াত শাফায়াতকে প্রত্যাখ্যান করে :

 یاایّها الذین آمنوا ممّا رزقناکم من قبل أن یأتی یوم لا بیعٌ فیه ولا خلّة ولا شفاعة والکافرون هم الظالمون

"হে ঈমানদারগণ! তোমাদেরকে যে জীবিকা দেয়া হয়েছে তা হতে ব্যয় কর সেদিন আসার পূর্বে যেদিন কোন ক্রয় বিক্রয়, বন্ধুত্ব ও শাফায়াত নেই এবং কাফেররা বুঝতে পারবে তারাই জুলুমকারী ছিল।” (সূরা বাকারা : ২৫৪)

কিন্তু অন্যত্র কোরআনে আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে শাফায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সুতরাং উক্ত আয়াতটিতে যে শাফায়াত আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত সংঘটিত হবে তাকেই অস্বীকার করা হয়েছে।

২। ইহুদীদের বিশ্বাসের শাফায়াতকে বাতিল ঘোষণা :

یا بنی إسرائیل أذکروا نعمتی التی أنعمت علیکم و انی فضّلکم علی العالمین واتّقوا یوماً لا تجزی نفسٌ عن نفسٍ شیئا ولا یقبل منها شفاعة ولا یوخذ منها عدلٌ ولا هم ینصرون

"হে বনি ইসরাঈল (ইসরাঈলের সন্তানগণ)! তোমাদের উপর যে নিয়ামত দিয়েছি তা স্মরণ কর। এবং নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে বিশ্ববাসীদের উপর প্রাধান্য দিয়েছিলাম। সেদিনকে ভয় কর (সেদিন হতে নিজেকে রক্ষা কর) যেদিন একজনকে অপরের জন্য শাস্তি দেয়া হবে না এবং কারো শাফায়াত (সুপারিশ) গ্রহণ করা হবে না। কোন বিনিময় গৃহীত হবে না এবং তারা সাহায্য প্রাপ্তও হবে না।” (সূরা বাকারা : ৪৭-৪৮)

এ আয়াতে কোরআন বিশেষ ধরনের শাফায়াতকে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে অর্থাৎ ইহুদীরা যে শর্তহীন শাফায়াতে বিশ্বাসী ছিল তা এ আয়াতে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। কারণ এ ধরনের শাফায়াতের ক্ষেত্রে অনুমতির প্রয়োজন নেই ধারণা করা হয়েছে এবং শাফায়াতকারী ও যার জন্য শাফায়াত করা হবে উভয়ের জন্যই কোন শর্ত আরোপ করা হয় নি।

৩। কাফেরদের জন্য শাফায়াতকে প্রত্যাখ্যান :

و کنّا نُکذِّبُ بِیَوم الدین حتّی اتانا الیقین فما تنفعهم شفاعةُ الشافعین

"(কাফেররা বলবে) আমরা প্রতিদান দিবসকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতাম। এমতাবস্থায় (মৃত্যুর মাধ্যমে) কিয়ামতের বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস লাভ করলাম। সেদিন শাফায়াতকারীদের শাফায়াত তাদের কোন কল্যাণ বয়ে আনবে না।” (সূরা আল মুদাস্সির : ৪৬-৪৮)

৪। মূর্তিদের শাফায়াতের অধিকার প্রত্যাখ্যান

 و یعبدون من دون الله ما لا یضرّهم ولا ینفعهم و یقولون هولاء شفعاءنا عند الله أ تُنبّئون الله بما لا یعلم فی السماوات ولا فی الارض سبحانه و تعالی عمّا یشرکون

"তারা (মুশরিকরা) আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর উপাসনা করে যা তাদের কোন অকল্যাণ ও কল্যাণই করতে পারে ন। তারা বলে এই মূর্তিগুলো আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট শাফায়াতকারী, তাদেরকে বল তোমরা কি আল্লাহ্কে এমন এমন বিষয়ে জানাতে চাও আকাশম-লী ও পৃথিবীতে যে বিষয়ে তিনি অবহিত নন। তোমরা যাকে তাঁর শরীক কর তিনি তা হতে পবিত্র ও ঊর্ধ্বে।” (সূরা ইউনুস : ১৮)

৫। শাফায়াত কেবল আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট :

قل لله الشفاعة جمیعا له ملک السماوات والارض ثمّ إلیه ترجعون

"শাফায়াত আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। তিনিই আকাশম-লী ও পৃথিবীর অধিপতি। অতঃপর তোমরা তার দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে।” (সূরা যুমার : ৪৪)

৬। শাফায়াত আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যদের জন্য শর্তাধীন :

ما من شفیعٍ إلا من بعد اذنه

"তাঁর অনুমতি ব্যতীত কোন শাফায়াতকারী নেই।” (সূরা ইউনুস : ৩)

ولا تنفع الشفاعة عنده الا لمن اذن له

 "কারো জন্য তার নিকট শাফায়াত তাঁর নিকট ফলপ্রসূ হবে না সেই ব্যক্তির জন্য ব্যতীত যাকে অনুমতি দেয়া হয়েছে।” (সূরা সাবা : ২৩)

উপরিউক্ত আয়াতসমূহকে সমন্বিত করে নিম্নোক্ত ফল পাওয়া যায় : যেহেতু কর্মের ক্ষেত্রে একত্ববাদের নীতির (তাওহীদে আফআলী) ভিত্তিতে বিশ্বে সকল কর্মের প্রকৃত প্রভাবক ও কর্তা হলেন... এবং কোন কর্মই তাঁর ইচ্ছা ও অনুমতি ব্যতিরেকে সম্পন্ন হয় না সেহেতু কোন কোন আয়াতে শাফায়াতকে নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়টির সঙ্গে যে সকল আয়াতে তাঁর অনুমতি সাপেক্ষে অন্যদের শাফায়াতের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে কোন বৈপরীত্য নেই। কারণ তিনিই তাঁর অনুমতি সাপেক্ষে বিশেষ শর্তাধীনে অন্যদের তা করার অধিকার দিয়েছেন যেমন নবী ও তাঁর ওলীদের এমনটি দিয়েছেন।

কয়েকটি কারণে মানব জাতির জন্য শাফায়াতের অপরিহার্যতা দেখা দেয় :

১। মানব জাতির গুনাহে পতিত হওয়া : কেউ কেউ বলেন, ‘কিয়ামত দিবসে মানুষের একমাত্র মুক্তির উপকরণ হলো সৎকর্ম’। যেমন পবিত্র কোরআনে এসেছে :

و أما من آمن و عمل صالحاً فله جزاء الحسنی

"এবং যে ব্যক্তি ঈমান আনবে ও সৎকর্ম করবে তার জন্য উত্তম প্রতিদান রয়েছে।” (সূরা কাহফ : ৮৮)

যদিও সাফল্য, সৌভাগ্য ও প্রতিদান লাভের বিষয়টি সৎকর্মের উপর অনেকটাই নির্ভর করে, কিন্তু অন্যান্য আয়াত হতে বোঝা যায়, শুধু সৎকর্মের মাধ্যমে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় যদি না মহান আল্লাহর অপরিসীম রহমত তার সঙ্গে যুক্ত না হয়। যেমন,

فلولا فضل الله علیکم ورحمته لکنتم من الخاسرین

"যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত তোমাদের উপর না থাকত, তবে অবশ্যই তোমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হতে।” (সূরা বাকারা : ৬৪)

ولو یواخذ الله الناس بظلمهم ما ترک علیها من دابّة

"যদি আল্লাহ্ মানব জাতিকে তাদের অন্যায়ের জন্য ধরতেন তবে পৃথিবীর উপর বিচরণশীল কোন প্রাণীকেই ছাড়তেন না।” (সূরা নাহল : ৬১)

ولو یواخذ الله النّاس بما كسبوا ما ترک علی ظهرها من دابّة

"যদি আল্লাহ্ মানুষকে তার কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও করতেন তবে ভূপৃষ্ঠের উপর চলমান কাউকে ছেড়ে দিতেন না।” (সূরা ফাতির : ৪৫)

২। আল্লাহর রহমতের ব্যাপকতা :

ربّنا وسعت کل شیء رحمةً و علماً

অর্থাৎ "হে আমাদের পালনকর্তা! আপনার রহমত ও জ্ঞান সকল কিছুকে পরিবেষ্টন করে আছে।” (সূরা মুমিন : ৭) 

فإن کذبّوک فقل ربّکم ذو رحمةٍ واسعةٍ

"যদি তারা তোমার প্রতিপালককে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে বল তোমাদের প্রভু অসীম রহমতের অধিকারী।” (সূরা আনআম : ১৪৭) 

শাফায়াত আল্লাহর ওলীদের রহমতের অন্যতম দৃষ্টান্ত।

৩। মানুষের অন্যতম মৌল আকাক্সক্ষা হলো মুক্তি। বুদ্ধিবৃত্তিক যুক্তি ও অভিজ্ঞতার আলোকে এটি প্রমাণিত যে, মানুষের অন্যতম মৌল আকাক্সক্ষা হলো পৃথিবী ও আখেরাতের শাস্তি হতে মুক্তি লাভ। যেহেতু মানুষের অন্যতম অভ্যন্তরীণ মৌল দিক এটি, সেহেতু মৃত্যুর পর বারজাখ (কবরের জীবন) হতে শুরু করে কিয়ামতের দিবস ও জাহান্নামে (সীমিত সময়ের জন্য) শাস্তি দানের মাধ্যমে তাকে পবিত্র করে তার সত্তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্যই শাফায়াত।

শাফায়াতের প্রভাব

শাফায়াতের প্রভাব ও ফলাফল সম্পর্কে দু’টি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে (১) শাফায়াত গুনাহকে মুছে দেয় ও শাস্তিকে লাঘব করে; (২) শাফায়াতের মাধ্যমে পুণ্য বৃদ্ধি পায় ও মর্যাদার উত্তরণ ঘটে। অধিকাংশ মুসলমান প্রথম অর্থে শাফায়াত গ্রহণ করেন। কিন্তু মুতাজিলাগণ দ্বিতীয় অর্থকে স্বীকার করে ও প্রথম অর্থকে গ্রহণযোগ্য মনে করে না। আমাদের মতে প্রথম অর্থ অধিকতর উপযুক্ত। নিম্নোক্ত যুক্তিসমূহের ভিত্তিতে :

১। শাফায়াতের বিষয়টি ইসলাম পূর্ব ইহুদী ও মুশরিকদের বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইসলাম শাফায়াতের বিষয়ে তাদের মধ্যে প্রচলিত কসংস্কার মূলক বিশ্বাসসমূহকে পরিশুদ্ধ করে সঠিক ধারণাটি ইসলামী সমাজে উপস্থাপন করেন। ইসলাম পূর্ব ইহুদী ও মুশরিকদের শাফায়াত সম্পর্কিত বিশ্বাসের বিষয়ে যাদের ধারণা রয়েছে তারা জানেন যে, তারা যে ধরনের শাফায়াতে বিশ্বাসী ছিল এবং তাদের নবীদের ও পূর্ব পুরুষদের অধিকার বলে জানত, তা তাদের গুনাহসমূহের ক্ষমার জন্যই ছিল। কিন্তু তাদের এ বিশ্বাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে সমস্যা ছিল তা হলো তারা শাফায়াতের অধিকারকে শর্তহীন মনে করত। তাই ইসলাম শাফায়াতের প্রতি বিশ্বাসকে আল্লাহর অনুমতির শর্তাধীন বলে ঘোষণা করে বলে:

من ذا الذی یشفعُ عنده إلا بإذنه

"কে আছে এমন যে সুপারিশ (শাফায়াত) করবে তাঁর নিকট তাঁর অনুমতি ছাড়া” (সূরা বাকারা : ২৫৫) এবং ولا یشفعون إلا من ارتضی "যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট তার জন্য ব্যতীত অন্য কারো জন্য শাফায়াতকারীরা শাফায়াত করতে পারে না।” (সূরা আম্বিয়া : ২৮)

২। শিয়া ও সুন্নী উভয়সূত্রে বর্ণিত হাদীসসমূহ শাফায়াতের সর্বজনীনতার প্রতিই ইঙ্গিত করে, যেমন মহানবী (সা.) বলেছেন :

اذّخرتُ شفاعتی لأهل الکبائر من امّتی

‘আমার সুপারিশকে আমার উম্মতের কবীরা গুনাহকারীদের জন্য সঞ্চিত রেখেছি।’ (সুনানে ইবনে মাজা, ২য় খ-, পৃ. ১৪৪১)

৩। কোন কোন আয়াতের ইশারা হতে বোঝা যায় আল্লাহ্ কোন কোন ক্ষেত্রে তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা ব্যতীতই গুনাহকে ক্ষমা করেন। এই সকল আয়াত গুনাহ মোচনের সাথেই অধিক সংগতিশীল। যেমন আল্লাহ্ বলেছেন :

هو الذی یقبل التوبة عن عباده و یعفو عن السیّئات

 "তিনি আল্লাহ্ বান্দাদের তওবাকে গ্রহণ করেন ও গুনাহসমূহকে ক্ষমা করেন।” (সূরা শুরা : ২৫)

শাফায়াতকারীদের হতে শাফায়াতের আবেদন

আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি অনেক গুনাহকারীকে আল্লাহ্ শাফায়াতের মাধ্যমে ক্ষমা করেন। পবিত্র কোরআন শাফায়াতের বিষয়টি নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নিয়ে তা আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে হবে বলে ঘোষণা করেছে।

من ذا الذی یشفع عنده إلا بإذنه

"কে আছে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারে।” (সূরা বাকারা : ২৫৫)

অন্যত্র বলেছেন :

ما من شفیعٍ الا من بعد إذنه

 "কোন সুপারিশকারীই তাঁর অনুমতির পূর্বে সুপারিশ করতে পারে না।” (সূরা ইউনুস : ৩)

অন্যদিকে শাফায়াতের বিষয়ে মূর্তিপূজকদের বিশ্বাসকে এ কারণে বাতিল বলে ঘোষণা করেছে যে, তারা এমন বস্তুকে সুপারিশকারী বলে গ্রহণ করেছে যার কল্যাণ ও অকল্যাণের ক্ষমতা নেই ও আল্লাহর পক্ষ হতে সুপারিশের কোন অধিকারও নেই। তাই বলা হয়েছে :

 و یعبدون من دون الله ما لا یضرّهم ولا ینفعهم و یقولون هولاء شفعائُنا عند الله قل أتنبّئُون الله بما لا یعلم فی السماوات ولا فی الارض سبحانه و تعالی عمّا یشرکون

"(এই অজ্ঞ ব্যক্তিরা) আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর উপাসনা করে যা তাদের কোন অকল্যাণ ও কল্যাণই করতে পারে না এবং তারা বলে এই মূর্তিগুলো আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য সুপারিশকারী।  বলুন, (হে নবী!) তোমরা কি আল্লাহ্কে এমন এমন বিষয়ে খবর দিতে চাও আকাশম-লী ও পৃথিবীতে যে বিষয়ে তিনি অবহিত নন। তোমরা তাঁর সঙ্গে যাকে শরীক কর তিনি তা হতে পবিত্র ও ঊর্ধ্বে।” (সূরা ইউনুস : ১৮)

সুতরাং যে আয়াতটি মুশরিকদের মূর্তিকে সুপারিশকারী হিসেবে গ্রহণকে প্রত্যাখ্যান করেছে তাকে শাফায়াতকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকারের পক্ষে দলিল হিসাবে উপস্থাপন সুস্পষ্ট অপযুক্তি। কারণ ইসলামে সুপারিশকারীর উপাস্য হওয়া ও শর্তহীন সুপারিশের বিষয়গুলো আদৌ নেই। পবিত্র কোরআন ফেরেশতা ম-লীকে সুপারিশকারী হিসেবে ঘোষণা করে বলেছে, তারা যার প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে তার জন্য ব্যতীত সুপারিশ করে না।

بل عبادٌ مکرمون لا یسبقون بالقول و هم بامره یعملون یعملون ما بین أیدیهم و ما خلفهم ولا یشفون إلا لمن ارتضی

"বরং তারা আল্লাহর সম্মানিত বান্দা, তারা কখনোই আল্লাহর নির্দেশের অগ্রগামী হয় না এবং তাঁর নির্দেশেই কাজ করে। তিনি (আল্লাহ্) তাদের অগ্র ও পশ্চাতে যা আছে সে সম্পর্কে অবহিত। তারা তাদের জন্যই শাফায়াত করে যাদের প্রতি তিনি সন্তুষ্ট।” (সূরা আম্বিয়া : ২৬-২৮)

সুতরাং মহানবী (সা.) ও অন্যান্যদের জন্য কিয়ামতের দিন শাফায়াতের বিষয়টি স্বীকৃত অর্থাৎ তাঁদের সুপারিশের অধিকার রয়েছে তখন মুমিনদের জন্য তাঁদের নিকট সুপারিশ কামনা বৈধ ও জায়েয হবে, যেমন মুমিনদের জন্য দোয়ার ক্ষেত্রেও এমন বিধান রয়েছে।

অনুবাদ: মোহাম্মাদ মুনির হোসাইন খান  

সংকলন ও সম্পাদন : আবুল কাসেম

 

মন্তব্য দর্শকরা
নাম:
ই-মেল:
* অভিমত: