bayyinaat

মৌল বিশ্বাস
প্রশ্নোত্তর
হযরত ইমাম আলী (আঃ) বলেন : 
لو لاحضور الحاضر و قيام الحجة بوجود الناصر.
“যদি এ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত না হতেন এবং এই সাহায্যকারীগণ থাকার কারণে আমার জন্য হুজ্জাত (চূড়ান্ত প্রমাণ) প্রতিষ্ঠিত না হতো (তাহলে আমি খেলাফতের এ দায়িত্ব গ্রহণ করতাম না)।
সারাংশ: হুকুমাতের বৈধতার মূল উৎস হচ্ছে দ্বীন এবং আল্লাহ্ তা‘আলার শরীয়াত বা আইন-বিধান প্রণয়ন বিষয়ক শাসন-কর্তৃত্ব। আর জনগণ কর্তৃক তা গ্রহণ করার ফলে প্রকৃত পক্ষে ফকিহের ঐশী হুকুমাত বাস্তবে কার্যোপযোগিতা লাভ করে এবং এর ফলে সে হুকুমাত সুদৃঢ় ও টেকসই হয়।
হযরত রাসূলে আকরাম (সাঃ) ও মা‘ছূম ইমামগণের (আঃ) যুগের পরে এবং হযরত ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর আত্মগোপনরত থাকার যুগে এ দায়িত্ব পরিপূর্ণ শর্তাবলীর অধিকারী মুজতাহিদ শাসকের ওপর অর্পিত। আর জনগণের জন্য ধরণীর বুকে আল্লাহ্ তা‘আলার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের বাস্তবায়নের জন্যে তাঁকে মেনে চলা এবং তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণ অপরিহার্য। মা‘ছূম ইমামগণ (আঃ) এ দায়িত্ব পালনের জন্য ফকিহ শাসকগণকে নিয়োগ করেছেন।
মানব সমাজের জন্য ফকিহদের নেতৃত্বের প্রয়োজন কেন? সারাংশ: মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্যই ইসলামের আইন-কানুন ও বিধি-বিধান রয়েছে যা প্রগতিশীল ও সার্বিক দিক থেকে উপযোগী। রাষ্ট্র ও শাসক সম্বন্ধেও ইসলামের আইন ও পরিকল্পনা আছে। ইসলামের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্রের প্রধানকে অবশ্যই দ্বীনী তথা ইসলামী ও রাজনৈতিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে হবে। সেই সাথে তাঁকে ইসলামের সার্বিক নীতিমালা থেকে বিস্তারিত ও খুটিনাটি বিধি-বিধান উদ্ঘাটনের যোগ্যতা এবং আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের জন্যে প্রয়োজনীয় সাহসিকতা, দৃঢ়তা ও আমানতদারীর অধিকারী হতে হবে এবং পাপকার্য থেকে দূরে থাকতে হবে।
শোকানুষ্ঠানের দর্শন সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন
ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোকানুষ্ঠানে মানুষ ও সমাজ গড়া এবং পরবর্তী প্রজন্মের নিকট আশুরা সংস্কৃতির উপাদানগুলো পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি শক্তিশালীভাবে বিদ্যমান। কেননা, ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আন্দোলন ও প্রশিক্ষণমূলক রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক শিক্ষা মানুষ এবং সমাজের নৈতিক উৎকর্ষ সাধনে মৌলিক অবদান রেখেছে। কারবালার ঘটনার মূল উপাদান আশুরা ও শিয়া সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে যা শোকানুষ্ঠানের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের নিকট স্থানান্তরিত হয়।
আলী (আ.) মহানবী (সা.)-এর স্থলাভিষিক্ত মনোনীত হওয়ার যুক্তি কী?
ইমাম আলী (আ.) অনুপম বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ব্যক্তিত্ব ও স্বকীয় গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন। মহানবী (সা.) এর সাহাবীদের মধ্যে কেউই এ ধরনের ব্যক্তিত্ব ও গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন না। তাঁর যাবতীয় বৈশিষ্ট্য ও ফযিলত সংক্রান্ত পরিচিতি কেবল মহান আল্লাহ্ ও রাসূলুল্লাহ্ই জানেন। মহানবী (সা.) বলেছেন: ‘হে আলী! কেবল আল্লাহ্ এবং আমি ব্যতীত আর কারো পক্ষে তোমার প্রকৃত পরিচয় জানা সম্ভব নয়।’
শাফায়াতের প্রতি বিশ্বাস কি শিরক?
পবিত্র কোরআনের যে সব আয়াতে শাফায়াত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে সেগুলোয় আসলে মহান আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে স্বাধীনভাবে শাফায়াত করার বিষয়কেই কেবল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আর যে সব আয়াতে শাফায়াতকে নির্দিষ্টভাবে মহান আল্লাহর জন্য বলে ব্যক্ত করা হয়েছে তার অর্থ তিনিই শাফায়াতের চূড়ান্ত অধিকারী এবং কারো সুপারিশ গ্রহণ ও বর্জনের তাঁর শর্তহীন ক্ষমতা রয়েছে। তাই অন্যান্য আয়াতে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, মহান আল্লাহ তাঁর এ নিজস্ব অধিকার (শাফায়াত) প্রকৃত শাফায়াতকারীদেরকেও দিয়েছেন যাতে তারাও তাঁর অনুমতি নিয়ে শাফায়াত করতে পারে...