মুসলিম বিশ্ব
মুসলিম সভ্যতা
বনী কুরাইযাহ্ গোত্রের ইহুদীরা কিছু দিন আগে মহানবীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল যে, যদি তারা ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাওহীদী ধর্ম ও আদর্শের শত্রুদের সাহায্য করে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে শত্রুদের উস্কানী দেয়, তা হলে মুসলমানরা তাদেরকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবে।
মদীনায় অবস্থানকারী তিন ইহুদী গোত্রই বিভিন্ন অজুহাতে মহানবির সাথে কৃত চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল। বনী কাইনুকা একজন মুসলমানকে হত্যা করেছিল, আর বনী নাযীর গোত্র মহানবীকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিল। তাই মহানবীও তাদেরকে মদীনা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছিলেন এবং তাদেরকে মুসলমানদের এলাকা থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। বনী কুরাইযাহ্ গোত্রও ইসলাম ধর্মের মূলোৎপাটন করার জন্য সম্মিলিত আরব বাহিনীর সাথে (পরিখার যুদ্ধে) সহযোগিতা করেছিল।
বনি কাইনুকার ইয়াহুদীরা আঘাতকারী ঘৃণ্য স্লোগান ও চরম অবমাননাকর কবিতা রচনা ও আবৃত্তি করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক সর্বাত্মক ঠাণ্ডাযুদ্ধ শুরু করে দেয় এবং তারা মহানবী (সা.)-এর সাথে যে সন্ধি চুক্তি করেছিল কার্যত তা ভেঙে ফেলে। বনি কাইনুকার ইয়াহুদীদের ঔদ্ধত্য ও উগ্রতার কারণে মুসলমানরাও তীব্রভাবে অসন্তষ্ট ও ক্ষুব্ধ হয়েছিল।
ইসলামী জ্ঞানের শিক্ষাকেন্দ্রসমূহ
মূল: মুর্তজা মোতাহহারী
অনুবাদ: আবুল কাসেম
সারাংশ: মুসলমানদের জ্ঞানার্জন ও বিকাশের ধারা মদীনা হতে শুরু হয়েছিল। মদীনার মসজিদে নিয়মিত শিক্ষার আসর বসত এবং সেখানে বিভিন্ন শিক্ষণীয় ইসলামী বিষয় নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা হতো। মদীনার পর ইরাক জ্ঞানের কেন্দ্রে পরিণত হয়। সর্বপ্রথম ইরাকের বসরা ও কুফা এই দু’শহর জ্ঞানকেন্দ্র ছিল। পরে বাগদাদ শহর নির্মিত হলে তা জ্ঞানকেন্দ্রে পরিণত হয় এবং এখান হতেই জ্ঞান-বিজ্ঞান ইসলামী বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
জ্ঞানের সাথে মুসলমানদের সম্পর্কের উৎস
মূল: মুর্তজা মোতাহহারী
অনুবাদ: আবুল কাসেম
সারাংশ: জর্জি যাইদানের মতে মুসলমানদের জ্ঞানের দিকে ঝুঁকে পড়ার অন্যতম কারণ হলো জ্ঞানার্জনের জন্য ইসলামের পুনঃপুন অনুপ্রেরণা দান ও তাকিদ। মুসলমানরা “সত্য জ্ঞানকে ভ্রান্ত বিশ্বাসীদের নিকট হতে হলেও গ্রহণ কর, কিন্তু ভ্রান্ত ধারণাকে সত্যপন্থীর নিকট হতে হলেও গ্রহণ কর না এবং যে কোন কথা পর্যালোচনা ও যাচাই কর।” --এ হাদিসটিকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিল।
আহমদ ইবনে হাম্বলকে আরব বংশোদ্ভূত ইরানী বলা যেতে পারে। তাই আহলে সুন্নাতের চার ইমামের একজন ইরানী, একজন আদনানী আরব, একজন কাহতানী আরব এবং একজন আরব বংশোদ্ভূত ইরানী। বিশিষ্ট ফকীহদের মধ্যে ইবনে সিরিজ শাফেয়ী, আবু সাঈদ ইসতাখরী ও আবু ইসহাক মুরুজী চতুর্থ হিজরী শতাব্দীতে, আবু হামিদ ইসফারাইনী, আবু ইসহাক ইসফারাইনী, আবু ইসহাক সিরাজী, ইমামুল হারামাইন জুয়াইনী, ইমাম মুহাম্মদ গাজ্জালী, আবুল মুজাফ্ফার খাওয়াফী ও কিয়াল হারাসী পঞ্চম হিজরীতে, আবু ইসহাক আরাকী মৌসেলী ষষ্ঠ হিজরীতে, আবু ইসহাক মৌসেলী সপ্তম হিজরীতে, ইমাম শাতেবী আন্দালুসী অষ্টম হিজরীতে প্রসিদ্ধ ইরানী ফকীহদের অন্তর্ভুক্ত।