bayyinaat

মুসলিম বিশ্ব
সাম্প্রতিক বিষয়
মুফাস্সিরগণ বলেছেন, এ আয়াত আবূ লুবাবার বিশ্বাসঘাতকতা প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছিল :
يا أيّها الّذين آمنوا لا تخونوا الله و الرّسول و تخونوا أماناتكم و أنتم تعلمون
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা সজ্ঞানে মহান আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের সাথে এবং যে সব আমানত তোমাদের কাছে আছে, সেসবের ব্যাপারে বিশ্বাসঘাতকতা করো না।” (সূরা আনফাল : ২৭)
সারাংশ: মদীনায় অবস্থানকারী তিন ইহুদী গোত্রই বিভিন্ন অজুহাতে মহানবির সাথে কৃত চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল। বনী কাইনুকা একজন মুসলমানকে হত্যা করেছিল, আর বনী নাযীর গোত্র মহানবীকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিল। তাই মহানবীও তাদেরকে মদীনা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছিলেন এবং তাদেরকে মুসলমানদের এলাকা থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। বনী কুরাইযাহ্ গোত্রও ইসলাম ধর্মের মূলোৎপাটন করার জন্য সম্মিলিত আরব বাহিনীর সাথে (পরিখার যুদ্ধে) সহযোগিতা করেছিল।
মদীনার ইয়াহুদীদের ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রসমূহ 
বনি কাইনুকার ইয়াহুদীরা আঘাতকারী ঘৃণ্য স্লোগান ও চরম অবমাননাকর কবিতা রচনা ও আবৃত্তি করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক সর্বাত্মক ঠাণ্ডাযুদ্ধ শুরু করে দেয় এবং তারা মহানবী (সা.)-এর সাথে যে সন্ধি চুক্তি করেছিল কার্যত তা ভেঙে ফেলে। বনি কাইনুকার ইয়াহুদীদের ঔদ্ধত্য ও উগ্রতার কারণে মুসলমানরাও তীব্রভাবে অসন্তষ্ট ও ক্ষুব্ধ হয়েছিল।
সারাংশ: বনি কাইনুকার ইয়াহুদীরা আঘাতকারী ঘৃণ্য স্লোগান ও চরম অবমাননাকর কবিতা রচনা ও আবৃত্তি করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক সর্বাত্মক ঠাণ্ডাযুদ্ধ শুরু করে দেয় এবং তারা মহানবী (সা.)-এর সাথে যে সন্ধি চুক্তি করেছিল কার্যত তা ভেঙে ফেলে। বনি কাইনুকার ইয়াহুদীদের ঔদ্ধত্য ও উগ্রতার কারণে মুসলমানরাও তীব্রভাবে অসন্তষ্ট ও ক্ষুব্ধ হয়েছিল।
ধর্মে কোন জোর-জুলুম নেই
ধর্মে জোর-জবরদস্তি করার কোন সুযোগ নেই –এ আয়াতটি বক্তব্যের দিক থেকে পবিত্র কোরআনের একটি স্পষ্ট আয়াত। পবিত্র কোরআন বলছে যে, ঈমানের ক্ষেত্রে যদি শক্তি প্রয়োগ করা সঙ্গত ও গ্রহণযোগ্য হতো তাহলে আল্লাহ্‌তায়ালা নিজেই তাঁর সৃষ্ট ক্ষমতা বলে সমস্ত মানুষকে ঈমানদার বানাতে পারতেন কিন্তু ঈমান এমন এক জিনিস যা মানুষ নিজেই বাছাই করবে। আর তাই কোরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে “তোমার রবের পক্ষ থেকে সত্য এসেছে এখন যার ইচ্ছে তা গ্রহণ করুক, আর যার ইচ্ছে একে প্রত্যাখ্যান করুক।” (১৮:২৯)
ইসলামের আহ্বান কি বিশ্বজনীন?
কোরআনে এমন কিছু আয়াত রয়েছে যাতে ইসলাম গ্রহণের বিষয়ে আরবদের এক প্রকার তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করা হয়েছে এবং তাদের অমনোযোগের দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। ঐ আয়াতগুলোর ভাবার্থ এরূপ যে, ইসলামের তোমাদের প্রতি কোন প্রয়োজন নেই, তাই যদি তোমরা ইসলাম গ্রহণ না কর তবে পৃথিবীতে এমন অনেক জাতি রয়েছে যারা মন হতে ইসলামকে গ্রহণ করবে, এমনকি এরূপ আয়াতসমূহ হতে এও বোঝা যায়, কোরআন ঐ জাতিসমূহের হৃদয়কে ইসলামের জন্য অধিকতর উপযোগী ও প্রস্তুত বলে মনে করে। এ আয়াতগুলো যাথার্থভাবে ইসলামের বিশ্বজনীনতাকে তুলে ধরে।
জাতি ও বংশগৌরবের গোঁড়ামির বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপর্যুপরি তাগিদ মুসলমানদের মনে বিশেষত অনারব মুসলমানদের মধ্যে প্রচণ্ড প্রভাব ফেলেছিল। এ কারণেই আরব-অনারব সকল মুসলমানই ইসলামকে তাদের স্বকীয় ও নিজস্ব বলে মনে করত। এ জন্যই উমাইয়্যা শাসকদের জাতিগত গোঁড়ামি অনারব মুসলমানদেরকে ইসলামের প্রতি বীতশ্রদ্ধ করতে পারে নি।
বর্তমান মুসলিম বিশ্বের সমস্যা ও আমাদের করণীয়
বর্তমানে সাম্রাজ্যবাদীরা মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি করছে, বিচ্যুত চিন্তার মুসলমানদের জিহাদের নামে সংঘবদ্ধ করে মুসলমানদের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা ইসলামকে ভীতিকর এক রূপে পরিচিত করানো ছাড়াও মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোতে নিজেদের উপস্থিতিকে বৈধতা দান করছে। আর তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করছে। তারা তাদের আধিপত্য ও দখলদারিত্ব বজায় রাখার স্বার্থে মধ্যযুগীয় রাজতন্ত্রের ধারক সমগ্রতাবাদী ও অধিকার হরণকারী রাজতান্ত্রিক শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। অপরদিকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে অবৈধ ইসরাইলী দখলদারীর বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টায় রত হয়েছে।