bayyinaat

Published time: 22 ,May ,2017      21:21:15
প্রশ্নোত্তর
ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোকানুষ্ঠানে মানুষ ও সমাজ গড়া এবং পরবর্তী প্রজন্মের নিকট আশুরা সংস্কৃতির উপাদানগুলো পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি শক্তিশালীভাবে বিদ্যমান। কেননা, ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আন্দোলন ও প্রশিক্ষণমূলক রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক শিক্ষা মানুষ এবং সমাজের নৈতিক উৎকর্ষ সাধনে মৌলিক অবদান রেখেছে। কারবালার ঘটনার মূল উপাদান আশুরা ও শিয়া সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে যা শোকানুষ্ঠানের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের নিকট স্থানান্তরিত হয়।
সংবাদ: 84

শোকানুষ্ঠানের দর্শন সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন

১ নং প্রশ্ন: শোকানুষ্ঠানের দর্শন সম্পর্কে প্রশ্ন করা যুক্তিসঙ্গত কি?

উত্তর:  প্রকৃতপক্ষে বাহির থেকে কোন বিষয়ের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করা বর্তমান সময়ের মানুষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। নতুন এ দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে যদি কোন ব্যক্তি বাহির থেকে শোকানুষ্ঠানের বিষয়টির দিকে দৃষ্টিপাত করে ও একে বিশ্লেষণ করে তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত এর সপক্ষে তার বুদ্ধিবৃত্তির কাছে গ্রহণযোগ্য কোন ব্যাখ্যা না পায় অথবা অন্তত এটি তার বুদ্ধিবৃত্তির সাথে সাংঘর্ষিক নয় তা অনুধাবন করে ততক্ষণ শোক পালনের বিষয়টি গ্রহণ এবং এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে না।

বিষয়সমূহের প্রতি এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই ভালো। কেননা, তা ইসলামী ও শিয়া সংস্কৃতি গঠনকারী শিক্ষার উপাদানসমূহের ক্ষেত্রে মানুষের জ্ঞানের ভিত্তিসমূহকে শক্তিশালী করে।  আর এটাও ভুলে গেলে চলবে না যে, এ নতুন দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে উপস্থাপিত প্রমাণসমূহ মানুষের ঈমানকেও আরো দৃঢ় ও উন্নত করবে। কেননা, ঈমান, জ্ঞান ও জ্ঞানের অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জিত হয়। এ কারণেই যদি শোক পালন করার বিষয়ের গ্রহণযোগ্য বর্ণনা ও যুক্তিগ্রাহ্য বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে এ সম্পর্কে যুবক ও নতুন প্রজন্মের বিশ্বাসের ভিত্তি শক্তিশালী হবে।

২ নং প্রশ্ন: আহলে বাইত (আ.)-এর জন্য শোকানুষ্ঠান পালনের দর্শন কী ও এর কী কী উপকারিতা রয়েছে?

উত্তর: শোক পালন করার দর্শন নিম্নলিখিত বিষয়সমূহে খুঁজে পাওয়া সম্ভব:

ক. ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের দৃষ্টিতে শোক প্রকাশ: কোরআন ও রেওয়ায়াত রাসূল (সা.)-এর পরিবারের প্রতি ভালোবাসাকে আবশ্যক করেছে। এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের কিছু প্রয়োজনীয় শর্ত রয়েছে। নিষ্ঠার সাথে ভালোবাসাকারী ব্যক্তি তিনিই হবেন যিনি বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার শর্ত যথাযথ পূরণ করেন। বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, তাদের সুখ ও দুঃখের সময় সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা।  এ কারণেই হাদীসে আহলে বাইতের সুখে ও আনন্দে আনন্দ অনুষ্ঠান পালন এবং দুঃখের সময় সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশের ওপর অনেক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

হযরত আলী (আ.)-এর নিকট থেকে বর্ণিত হয়েছে:

«يفرحون لفرحنا و يحزنون لحزننا»

‘(আমাদের  শিয়ারা) আমাদের সুখে সুখী ও আমাদের দুঃখে দুঃখী হয়।’

ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন:

«شيعتنا جزء منا خلقوا من فضل طينتنا يسوؤهم ما يسؤنا و يسرّهم ما يسرّنا»

‘আমাদের শিয়ারা আমাদেরই অংশ, আমাদের মাটির অতিরিক্ত অংশ থেকে সৃষ্টি হয়েছে; যা আমাদেরকে ব্যথিত ও আনন্দিত করে, তা তাদেরকেও ব্যথিত ও আনন্দিত করে।’

এছাড়াও, আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিগত ও ধর্মীয় দায়িত্ব যে, আহলে বাইতের জন্য শোক প্রকাশের দিনগুলোতে অশ্রু বিসর্জন ও আহাজারির মাধ্যমে নিজেদের শোক ও দুঃখকে প্রকাশ করা এবং দুঃখিত ও ব্যথিত ব্যক্তির মতো কম খাওয়া ও কম পান করা।

পোশাকের দিক থেকে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে যে সকল পোশাক রং এবং পরিধানের ধরনের দিক থেকে শোক ও দুঃখের প্রকাশ ঘটায় সেগুলো পরিধান করাই বাঞ্ছনীয়।

খ. মনুষ্যত্ব ও মানবতাবোধ তৈরির দৃষ্টিতে শোক প্রকাশ: যেহেতু শিয়া সংস্কৃতিতে শোক প্রকাশ অবশ্যই জ্ঞান ও পরিচিতির ভিত্তিতে হওয়া অপরিহার্য, সেহেতু শোকানুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হলো সম্মানিত ইমামদের সাথে একাত্মতা ও সমবেদনা প্রকাশ করা, তাঁদের মর্যাদা, গুণ এবং আদর্শের স্মরণ করা। প্রকৃতপক্ষে এ কাজটি মানুষকে তাঁদের নিকট থেকে আদর্শ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে।

যে ব্যক্তি জ্ঞান ও প্রজ্ঞা সহকারে শোকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে তার মধ্যে অন্তর্দৃষ্টি ও আবেগ-উদ্দীপনা এবং জ্ঞান ও হৃদয়ের অনুভূতির মধ্যে সমন্বয় ঘটে। এর ফলে তার ইচ্ছাশক্তি দৃঢ় ও শক্তিশালী হয়। আর যখন সে শোকের অনুষ্ঠান থেকে বের হয়ে আসে তখন একজন কর্মতৎপর অগ্রগামী প্রেমিকে পরিণত হয়, যে নিজের মধ্যে প্রেমাস্পদের পূর্ণতার গুণাবলি সৃষ্টির জন্য সংকল্পবদ্ধ।

গ. সমাজ গঠনের দৃষ্টিতে শোক প্রকাশ: যেহেতু শোকানুষ্ঠান পালন প্রকৃত মানুষ গড়ার ক্ষেত্র সৃষ্টি করে সেহেতু এর ফলে মানুষের অন্তরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয় যার প্রভাব সমাজে পড়ে এবং মানুষ সচেষ্ট হয় আহলে বাইতের আদর্শকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে।

অন্য ভাষায়, আহলে বাইতের প্রতি শোক প্রকাশ প্রকৃতপক্ষে একটি মাধ্যম যা আমাদেরকে তাঁদের আদর্শ রক্ষা ও বাস্তবায়নে উদ্বুদ্ধ করে। এ কারণেই বলা যায় যে, শোক প্রকাশের একটি দর্শন হলো ইসলামের আদর্শ অনুসারে সমাজ গঠন করা।

ঘ. শিয়া সংস্কৃতি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্থানান্তর: কেউ এ চরম সত্যটিকে অস¦ীকার করতে পারবে না যে, নতুন প্রজন্ম শিশুকাল থেকেই শোক প্রকাশের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আহলে বাইতের সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হয়। প্রকৃতপক্ষে শোকানুষ্ঠান পালন ইমামদের তত্ত্বগত ও ব্যবহারিক শিক্ষা ও আদর্শকে পরবর্তী প্রজন্মের নিকট স্থানান্তরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। শোকানুষ্ঠান পালন, এর ধরন ও বিষয়বস্তুর কারণে এটি আহলে বাইতের বাণী এবং কর্মের সাথে পরিচিত হওয়া এবং নতুন প্রজন্মকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করা ও গড়ে তোলার সবচেয়ে উত্তম পথ।

৩ নং প্রশ্ন: ইমাম হোসাইন (আ.)-এর জন্য শোক প্রকাশের দর্শন কী?

উত্তর: ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোকানুষ্ঠানে মানুষ ও সমাজ গড়া এবং পরবর্তী প্রজন্মের নিকট আশুরা সংস্কৃতির উপাদানগুলো পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি শক্তিশালীভাবে বিদ্যমান। কেননা, ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আন্দোলন ও প্রশিক্ষণমূলক রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও  সামাজিক শিক্ষা মানুষ এবং সমাজের নৈতিক উৎকর্ষ সাধনে মৌলিক অবদান রেখেছে। কারবালার ঘটনার মূল উপাদান আশুরা ও শিয়া সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে যা শোকানুষ্ঠানের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের নিকট স্থানান্তরিত হয়।

আশুরার ঘটনা বর্ণনা ও এ সম্পর্কিত আলোচনা ও শ্লোগানগুলোর মধ্যে মানুষ ও সমাজ এবং বিপ্লবী সংস্কৃতি তৈরির মূল উপাদান খুঁজে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইবাদত, ত্যাগ, বীরত্ব, আল্লাহর ওপর নির্ভরতা, ধৈর্য, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ, ইয়াযীদী শাসনের অধীনে ইসলামের ধ্বংস, ইয়াযীদীদের মতো ব্যক্তির হাতে বাইআত গ্রহণ নিষিদ্ধ, অপমানের চেয়ে মৃত্যু শ্রেষ্ঠ, পরীক্ষার ময়দানে সত্যপথ অবলম্বনকারীদের স্বল্পতা, অবৈধ ও বাতিল শাসকের সময়ে শাহাদাত কামনার প্রয়োজনীয়তা, শাহাদাত মানুষের জন্য সৌন্দর্য বলে গণ্য হওয়া, অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে সংগ্রামের দায়িত্ব, সত্য ও সঠিক ইমামের বৈশিষ্ট্য, আল্লাহর সন্তুষ্টির ওপর সন্তুষ্ট থাকা, সত্য সংগ্রামে শাহাদাতকামীদের সহযোগিতা করা, ঈমানদার, জ্ঞানী ও স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য অপমান সহ্য করা নিষিদ্ধ হওয়া, মৃত্যুকে চিরস্থায়ী বেহেশতে প্রবেশের সাঁকো হিসেবে গণ্য করা, সত্য প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সবসময় সকল মানুষের কাছে সহযোগিতা কামনা করা এবং এ ক্ষেত্রে স্বাধীন ও সাহসী হওয়া।

হোসাইনের আচরণ দুনিয়াকে স্বাধীনতার শিক্ষা দিয়েছে

হোসাইনের চিন্তা-চেতনা মানুষের অন্তরে সাহসের বীজ বপণ করেছে।

যদি তুমি পৃথিবীর কোন ধর্মে বিশ্বাসী না হও, কমপক্ষে স্বাধীনচেতা মানুষ হও

এটি হোসাইন এর বিস্ময়কর বক্তব্য।

অপমানের জীবন থেকে সম্মানের মৃত্যু উত্তম

এটি হোসাইন এর কণ্ঠ থেকে উত্থিত সুমিষ্ট সংগীত।

এ ছাড়া নিচের বিষয়গুলো ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোক প্রকাশের দর্শনের অন্তর্ভুক্ত:

১. সকল যুগের অন্যায়-অত্যাচারীদের প্রতি এক ধরনের প্রতিবাদ  ও বিশ্বের মযলুমদের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।

২. মানুষের মধ্যে ন্যায় প্রতিষ্ঠার অনুভূতিকে প্রবল ও অত্যাচারীদের অত্যাচারের প্রতিশোধ গ্রহণ করার প্রবণতাকে শক্তিশালী করা।

৩. মুসলিম সমাজকে সত্যের প্রতিরক্ষায় উদ্বুদ্ধ ও বিজয়ী করার জন্য প্রস্তুত করা।

রেওয়ায়াতে শোক প্রকাশ

৪ নং প্রশ্ন: আহলে বাইত (আ.)-এর জন্য শোকানুষ্ঠান পালন করার ক্ষেত্রে কোন রেওয়ায়াত রয়েছে কি?

উত্তর: এ সম্পর্কে অনেক রেওয়ায়াত রয়েছে। আহলে বাইতের জন্য শোক প্রকাশ করার বিষয়ে তিনটি রেওয়ায়াত বর্ণনা করাকে যথেষ্ট বলে মনে করছি।

১. ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন:

«رحم الله شيعتنا، شيعتنا والله هم المؤمنون فقد والله شرکونا فی المصيبة بطول الحزن و الحسرة»

‘আল্লাহ আমাদের শিয়া ও অনুসারীদেরকে রহমত ও দয়া করুন। আল্লাহর শপথ, আমাদের অনুসারীরাই হলো ঈমানদার যারা তাদের দীর্ঘ দুঃখ-শোক প্রকাশ ও অনুশোচনা দ্বারা আমাদের ওপর আপতিত মুসিবতে অংশীদার হয়।’

২. ইমাম রেযা (আ.) বলেন:

«من تذکر مصابنا و بکی لما ارتکب مناکان معنا فی درجتنا يوم القيامه ومن ذکر بمصابنا فبکی وابکی لم تبك عينه يوم تبکی العيون ومن جلس مجلسا يحيی فيه امرنا لم يمت قلبه يوم تموت القلوب»

‘যে আমাদের মুসিবতকে স্মরণ করে ও আমাদের ওপর যে যুলুম ও অত্যাচার হয়েছে তার জন্য ক্রন্দন করে কিয়ামতের দিন সে আমাদের সাথে থাকবে; আমাদের যে সম্মান ও মর্যাদা রয়েছে তা লাভ করবে। যে ব্যক্তি আমাদের মুসিবতসমূহকে বর্ণনা করবে অতঃপর নিজে ক্রন্দন করবে এবং অন্যকে কাঁদাবে, কিয়ামতের দিনে তার (ইমামদের শোকে ক্রন্দনকারী) চোখ ব্যতীত সকল চোখ ক্রন্দনরত অবস্থায় থাকবে। যে আমাদের নির্দেশের বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে, তার অন্তর সেদিন জীবিত থাকবে যেদিন সকল অন্তর মরে যাবে।’১০

৩. ইমাম জাফর সাদিক (আ.) ফুদাইলকে বলেছেন:

«تجلسون و تحدثون؟ قال: نعم جعلت فدا ك، قال: ان تلك المجالس احبها فاحيوا امرنا یا فضيل، فرحم الله من احيی امرنا يا فضيل من ذکرنا او ذکرنا عنده فخرج من عینه مثل جناح الذباب غفرالله له ذنوبه لو کانت اکثر من زبدالبحر»

‘তোমরা কি (আমাদের কথা স্মরণ করে শোকানুষ্ঠান পালন করার উদ্দেশ্যে) একসঙ্গে বস এবং (আমাদের ওপর যা বিপদ-মুসিবত আপতিত হয়েছে তা নিয়ে) আলোচনা কর? ফুদাইল বললেন: ‘জী, অবশ্যই, আপনার জন্য আমি উৎসর্গিত!’ ইমাম (আ.) বললেন: ‘এ ধরনের শোকানুষ্ঠানকে আমরা পছন্দ করি। অতঃপর হে ফুদাইল! আমাদের নির্দেশকে বাস্তবায়ন কর। যারা আমাদের নির্দেশের বাস্তবায়ন করে তারা আল্লাহর দয়া ও রহমতের অন্তর্ভুক্ত হয়। হে ফুদাইল! যে কেউ আমাদেরকে স্মরণ করবে ও যার নিকট আমাদের স্মরণ করানো হবে এবং তাতে কারো চোখ থেকে মাছির পাখার সমপরিমাণেও অশ্রু ঝরবে, আল্লাহ তার সকল গুনাহকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও তার গুনাহের পরিমাণ সাগরের ফেনার থেকেও অধিক হয়।’১১

 

তথ্যসূত্র



. সূরা শুরা, আয়াত ২৩, সূরা হুদ, আয়াত ২৯ এবং মিজানুল হিকমাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৩৬।

. আল-মাহাব্বাত ফীল কিতাব ওয়াস সুন্নাহ, পৃ. ১৬৯-১৭০, ১৮১-১৮২।

. বিহারুল আনওয়ার, ৪৪তম খণ্ড, পৃ. ২৮৭।

. আমালী, পৃ. ৩০৫।

. মুয়াবিয়া ইবনে ওয়াহহাবকে উদ্দেশ্য করে ইমাম জাফর  সাদিক (আ.) বলেন : ‘শোক প্রকাশকারীরা যেন শহীদদের নেতা ইমাম হোসাইন (আ.)-এর জন্য আশুরার দিনে পানি পান ও খাদ্য গ্রহণ থেকে ততক্ষণ বিরত থাকে যতক্ষণ না আসরের নামাযের ফজিলতের সময় থেকে এক ঘণ্টা আতিবাহিত হয়, (এ সময়ের পর) যেন শোকার্ত ব্যক্তির মতো সামান্য খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে।’- তারীখু নিয়াহাতুল ইমামিশ শাহিদ আল-হুসাইন ইবনে আলী, ১ম খ-, পৃ. ১৭৫-১৯৫।

. আশুরার অভিধান ,(فرهنگ عاشورا) পৃ. ২৬৮-৬৭১; হোসাইন, আক্লে র্সোখ, পৃ. ৭৭-১১৯; ইমাম হাসান ও হোসাইন (আ.), পৃ. ১১৬-১২১।

. পবিত্র কোরআনে এরূপ প্রতিবাদ করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সূরা নিসা: ১৪৮, সূরা হজ: ৩৯, সূরা শোয়ারা: ২২৭। (সম্পাদক)

. পবিত্র কোরআনেও আল্লাহর নবীদের ওপর আপতিত মুসিবত ও মুমিনদের শাহাদাতের কথা বিশেষ আবহে স্মরণ করা হয়েছে যা তাঁদের প্রতি মহান আল্লাহর সহানুভূতি ও শোকপ্রকাশের চিহ্ন। যেমন সূরা বুরুজে মুমিনদের একদলের শহীদ হওয়ার ঘটনাকে আল্লাহ করুণভাবে উপস্থাপন করেছেন যা পাঠে সকল মুমিনের অন্তর শোকে মূহ্যমান হয়। নবীদের জীবনীতেও আমরা এরূপ শোক প্রকাশের নমুনা দেখতে পাই। যেমন হযরত ইয়াকুব হযরত ইউসূফ (আ.)-কে হারিয়ে দীর্ঘদিন এতটা ক্রন্দন করেছিলেন যে, তাঁর চোখ দু’টি সাদা হয়ে গিয়েছিল। অথচ তিনি জানতেন হযরত ইউসূফ বেঁচে আছেন। (সূরা ইউসূফ: ৮৪-৮৭)। (সম্পাদক)

. বিহারুল আনওয়ার, ৪৪তম খণ্ড, পৃ. ২২২

১০. প্রাগুক্ত, পৃ. ২৭৮।

১১. প্রাগুক্ত, পৃ. ২৮২, ২৮৯।

মন্তব্য দর্শকরা
নাম:
ই-মেল:
* অভিমত: