bayyinaat

প্রচ্ছদ
Explore
অতিরঞ্জিত ধারণাপোষণকারীদের সম্পর্কে আহলে বাইতের অনুসারী মহান চিন্তাবিদদের বক্তব্য এবং ফতোয়াসমূহ তাদের ইমাম (আ.)-দের মতই। তারা অতিরঞ্জিত ধারণাপোষণকারীদেরকে কাফের ঘোষণা করেছেন এবং তাদের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
সারাংশ: শেইখ সাদুক (রহ.) বলেন, ‘ইমামদের ব্যাপারে অতিরঞ্জিত ধারণাপোষণকারী এবং মুফাওয়াদা (যারা বিশ্বাস করে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করে সবকিছু ইমামদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন)-দের সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস হল তারা কাফের এবং তারা হল ইহুদী, খ্রিষ্টান, অগ্নি-উপাসক, কাদরিয়া (মানুষের পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী), হারুরীয়া (খারেজী) এবং সকল বিদআত সৃষ্টিকারী ও কু-প্রবৃত্তির অনুসারী পথভ্রষ্ট থেকেও নিকৃষ্ট ও অধম। তারা আল্লাহর মর্যাদাকে অনেক খাট করেছে।
পঞ্চম বাহিনীর পরিণতি

اما و الله ما لُمت فِى عداوتك و لكن من يخذل الله يُخذل 

“আমি আপনার সাথে শত্রুতা পোষণ করার জন্য মোটেই অনুতপ্ত নই; তবে মহান আল্লাহ্ যাকে অপদস্থ করেন কেবল সে-ই অপদস্থ হয়।”
সারাংশ: বনী কুরাইযাহ্ গোত্রের ইহুদীরা কিছু দিন আগে মহানবীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল যে, যদি তারা ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাওহীদী ধর্ম ও আদর্শের শত্রুদের সাহায্য করে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে শত্রুদের উস্কানী দেয়, তা হলে মুসলমানরা তাদেরকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবে।
ইমাম আলী (আ.) বলেন :
مَنْ غَشَّ الْمُسْلِمِيْنَ فِيْ مَشْوَرَةٍ فَقَدْ بَرِئْتُ مِنُهُ
“ঐ ব্যক্তির সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই যে পরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রে মুসলমানদেরকে ধোঁকা দেয়।
যে নিজের কথা ও চিন্তা-ভাবনার ওপর নির্ভর করে (এবং অন্যের পরামর্শ ও অভিমত উপেক্ষা করে) সে আসলে নিজেকে বিপদ ও সমস্যার সাথে জড়িয়ে ফেলে; আর যে ব্যক্তি অন্যের অভিমতকে স্বাগত জানায় অর্থাৎ তা থেকে সাহায্য নেয় সে স্খলন ও ভুল-ভ্রান্তি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়। মহান আল্লাহ্ ভুল-ভান্তির ঊর্ধে হওয়া সত্ত্বেও স্বীয় নবী (সা.)-কে তাঁর সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
২২৮ নং খুতবায় তিনি বলেছেন, فإن تقوى الله مفتاح سداد و ذخيرة معادٍ و عتق من كلّ ملكةٍ و نجاة من كلّ هلكةٍ “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহর তাকওয়া সততার চাবি, আখেরাতের পাথেয়, সকল ধরনের দাসত্ব থেকে মুক্তি এবং সকল প্রকার ধ্বংস থেকে নাজাতস্বরূপ।”
নাহজুল বালাগায় তাকওয়া একটি আত্মিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি হিসেবে উত্থাপিত হয়েছে যা অনুশীলন ও চর্চার মাধ্যমে বিকশিত হয়। আর এর বহু চি‎হ্ন, নিদর্শন এবং অপরিহার্য-অবিচ্ছেদ্য বিষয় ও ফলাফল রয়েছে। তাকওয়া পাপ থেকে বিরত থাকাকে সহজসাধ্য করে।
মহানবী বললেন : “তোমার স্বামীর দুআ কবুল হয়েছে। আল্লাহ্ চান না, এ লাশ আমরের ঘরে ফিরে যাক। তোমার এখন কর্তব্য, এই তিনটি লাশই উহুদ প্রান্তরে দাফন করা। জেনে রেখ, পরকালে তারা তিনজনই একত্রে থাকবে।”
হিন্দ ছিলেন আমর ইবনে হাযামের মেয়ে এবং জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ আনসারীর ফুফু। তিনি উহুদ প্রান্তরে যান। এই নারী তাঁর স্বামী, ভাই ও সন্তানদের লাশ উটের উপর বেঁধে মদীনা নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ অবস্থায়ও মনে হলো তাঁর যেন কোন বিপদই হয় নি! অত্যন্ত উৎফুল্ল কণ্ঠে তিনি মদীরার নারীদের বললেন : “আমার কাছে আনন্দের খবর আছে। আল্লাহর রাসূল জীবিত আছেন। এই বিরাট নেয়ামতের মুকাবেলায় সকল দুঃখ-কষ্ট ও বিপদাপদ নগণ্য ও তুচ্ছ।”
রাসূল (সা.) বলেছেন: «أَلْحَسَنُ وَ اْلْحُسَيْنُ سَيِّدا شَبَابِ أَهْلِ اْلْجَنَّةِ» “হাসান ও হুসাইন বেহেশতের যুবকদের নেতা।”
নিঃসন্দেহে ইমাম হাসানের বিয়ে ও তালাকের ব্যাপারে যে বড় এক সংখ্যার উল্লেখ করা হয়েছে তা স্বয়ং পাঠকের মনে এ প্রশ্নের সৃষ্টি করে যে, তবে কি তালাক মহান আল্লাহর দৃষ্টিতে সবচেয়ে অপছন্দনীয় বৈধ কর্ম বলে বিবেচিত নয় যা আল্লাহর আরশকে প্রকম্পিত করে। এরূপ এক অপছন্দনীয় কর্ম কিভাবে বেহেশতের যুবকদের নেতা থেকে বারবার ঘটতে পারে। তবে কী তিনি আল্লাহর আরশ প্রকম্পিত হওয়ার কোন পরওয়াই করতেন না।